Saturday 9 November 2013

বাঙালির রাজনৈতিক আদর্শের কাঠগড়ায় চৌধুরি মইনুদ্দিন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমুলক রায়

মঈনউদ্দিন চরিত ঃ 

স্বাধীনতা যুদ্ধ তখন প্রায় শেষ প্রহরে । সময়টা ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি । নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগ আর ২ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার কথা বিশ্বের কাছে জানান দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে এক নবজাতক দেশ । বাংলাদেশ । পরাজয় অনিবার্য বুঝতে পেরে দুই দশকের বেশী সময় ধরে শোষন করা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তার বাঙালি  দোসররা বাঙালির উপর শেষ প্রতিশোধ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় । আলবদরের একটি বিশেষ দলকে নিয়োজিত করা হয় বাঙালি বুদ্ধিজীবিদের হত্যা করতে । শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাহিত্যিক, চলচিত্র নির্মাতা, শিল্পী কেউ বাদ পড়েনি সেই তালিকা থেকে । নির্মম ভাবে হত্যা করা হয় বাংলার সুর্য সন্তানদের [১] ।  সদ্য রাজনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন করা দেশটি আঁতুড় ঘরেই কয়েক যুগে পিছিয়ে পড়ে মুক্ত বুদ্ধির চর্চায় এবং বিকাশে ।

আলবদরের যেই বিশেষ দলটিকে বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ডের দায়িত্ব দেয়া হয় তার নেতৃত্বে ছিল তরুন এক সাংবাদিক । চৌধুরি মঈনউদ্দিন । বুদ্ধিজীবিদের তালিকা তৈরি, ঠিকানা খুজে বের করা, অপহরন, নির্যাতন করা এবং সবশেষে নির্মম ভাবে হত্যা করা সব কিছুতেই তার ছিল সক্রিয় ভুমিকা । ১৬ই ডিসেম্বর স্বাধীনতার পরপরই অন্যান্য অনেক শীর্ষস্থানীয় রাজাকারের মতই চৌধুরি মঈনউদ্দিন পাড়ি জমায় দেশের বাইরে । স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশের আভ্যন্তরিন রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক অস্থিরতা, আন্তর্জাতিক মহলের চাপ, ৭৫ পরবর্তী সময়ে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখল এসব কিছুর ডামাঢোলে চাপা পড়ে যায় মঈনুদ্দিন অধ্যায় । অতীত ভুলে সামনে এগোতে থাকার মিছিলে সামিল হওয়া বাঙালি জাতি ভুলতে বসে স্বাধীনতার উষা লগ্নের সবচেয়ে ঘৃন্যতম খুনিদের একজনকে । ভুলে যায় জন্মঋন ।

১৯৯৫ সালে ব্রিটেনের টিভি চ্যানেল "চ্যানেল ফোরে" প্রচারিত হয় "ওয়ার ক্রাইম ফাইলস" [২] । স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ প্রহরে বুদ্ধিজীবি হত্যাকান্ডের ঘটনার উপর ভিত্তি করে তৈরি এই প্রামাণ্যচিত্রে উঠে আসে, আলবদরের নেতৃত্বস্থানীয় কয়েক জনের ভয়ংকর ভুমিকার কথা । দুই দশক ধরে ইতিহাসের পাতা থেকে পালিয়ে বেড়ানো এক ঘৃন্য পশুর পুনঃআবির্ভাব ঘটে ইতিহাসের পটভুমিতে । চৌধুরি মঈনউদ্দিন । চ্যানেল ফোরের সাংবাদিকরা খুজে বের করে মঈনউদ্দিনের বিভৎস কর্মকান্ডের প্রত্যক্ষদর্শীদের; নিহত বুদ্ধিজীবীদের স্বজনদের এবং বেঁচে যাওয়া কয়েকজন বুদ্ধিজীবীকে । তাদের বর্ননায় উঠে আসে একাত্তরের শেষদিকের সেই বিভিষিকাময় রাতগুলার কথা । ৭১ পরবর্তি সময়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত মঈনউদ্দিনের ছবি ও বর্ননার সাথে প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান মিলিয়ে খুজতে খুজতে চ্যানেল ফোরের সাংবাদিক দল পৌছে যায় ব্রিটেনে । স্বাধীনতার ২৪ বছর পর চৌধুরি মঈনউদ্দিনের খোজ মিলে ব্রিটেনে । যুদ্ধের পরপরই ব্রিটেনে পালিয়ে আসে মঈনউদ্দিন । পালিয়ে আসা অন্যান্য রাজাকার-আলবদর সদস্যদের সাথে নিয়ে গঠন করে "দাওয়াতুল ইসলাম" নামে জামাত-এ-ইসলামের আদর্শের একটি সংগঠন । ব্রিটিশ বাংলাদেশীদের একটি বড় অংশের ধর্মান্ধতা এবং সাম্প্রদায়িক মানসিকতাকে কাজে লাগিয়ে, ব্রিটেনে বাংলাদেশী মুসলিমদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ইস্ট লন্ডন মসজিদের ভাইস চেয়ারম্যান মনোনীত হয় [৩] । 

চ্যানেল ফোরের এই প্রামাণ্যচিত্র প্রচারিত হবার পর খোদ ব্রিটেনেই চৌধুরী মঈনউদ্দিনকে নিয়ে বিতর্কের ঝড় বয়ে যায় । "ব্রিটেনের মাটিতে যে কোন দেশে সংগঠিত যুদ্ধপরাদের বিচার সম্ভব ", এমন আশ্বাস ব্রিটিশ মুলধারার বিভিন্ন রাজনীতিবিদদের মুখে বার বার শোনা গেলেও, বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যায়নি । চৌধুরি মঈনউদ্দিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাদের সাথে সংস্লিষ্ট থাকার অভিযোগ এবং পর্যাপ্ত প্রমান থাকা স্বত্তেও কোন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও শোনা যায় নি । গত ৩রা নভেম্বর বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যাল-২ , বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ডের অপরাধে অভিযুক্ত চৌধুরি মঈনউদ্দিন এবং যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী আশরাফুজ্জামানকে ৫ টি অপরাধ প্রমাণের ভিত্তিতে মৃত্যুদন্ডাদেশ দেয় [৪] । মইনউদ্দিন এবং আশরাফুজ্জামানের অনুপস্থিতিতেই এই রায় দেয়া হলেও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এখনো অপরাধী বিনিময়ের কোন অনুরোধ ব্রিটিশ বা আমেরিকান প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয় নি ।  ব্রিটেনে মুসলিম সমাজে মঈনউদ্দিনের প্রতিপত্তি, বাংলাদেশের দুর্বল ফরেন ডিপ্লোমেসি এবং ব্রিটেনে আশ্রয় গ্রহনকারী যুদ্ধপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করার ক্ষেত্রে ব্রিটিশ প্রশাসনের উদাসীনতা [৫] এই সব মিলিয়ে মঈনউদ্দিন রয়ে যায় ধরাছঁোয়ার বাইরে ।

রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমুলক বিচার ঃ 

খুব স্বাভাবিক ভাবেই এই রায় প্রকাশের পর পরই চৌধুরী মঈনউদ্দিনের আঈনজীবী ব্যারিস্টার টবি ক্যাডম্যান ব্রিটেনের ট্যাবলয়েড পত্রিকা মেট্রোতে দেয়া সাক্ষাতকারে এই রায়কে রাজনৈতিক ভাবে উদ্দেশ্য প্রনোদিত বলে আক্ষায়িত করে বিবৃতি দেয় [৬] এবং বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যানের সংগে সরকারের যোগসাজসের অভিযোগ আনে । বি.এন.পি জামাত গোষ্ঠীর অতি প্রচারনার ফলে "রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রনোদিত" শব্দটির বিস্তার এখন রাজনীতির মাঠ ছাড়িয়ে বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে । যুদ্ধপরাধের বিচার গোড়া থেকেই এই প্রক্রিয়াকে দেশে এবং দেশের বাইরে প্রশ্নবিদ্ধ করার উদ্দেশ্যে বি.এন.পি এবং জামাতের প্রচারযন্ত্র যেন হিটলারের প্রপাগান্ডা মিনিস্টার জোসেফ গোয়েবল্সের "বিগ লাই" থিওরি ইম্প্লেমেন্ট করার চেষ্ঠায় ব্যতিব্যস্ত । তাদের এই প্রচার যে বেশ ভালো ভাবেই সফল হয়েছে, তা পরিষ্কার বোঝা যায় যুদ্ধপরাধের বিচারের ব্যপারে বাংলাদেশের শিক্ষিত যুব সমাজের একটি বড় অংশের অজ্ঞতা এবং মুর্খতায় । "আওয়ামিলীগ তো শুধু জামাতের যুদ্ধপরাধের বিচারই করছে " ; "ঠিক আছে গোলাম আজম রাজাকার ছিল কিন্তু আওয়ামিলীগ নিজের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের লক্ষ্যে এই বিচার করছে "; এই সাঈদী সেই সাঈদী নয় "; "কাদের মোল্লা মেধাবী ছাত্র ছিলেন"; বিচার আন্তর্জাতিক মানের এবং স্বচ্ছ নয়,  ইত্যাদি ইত্যাদি । পাঠক কিন্তু ভুল করেও মনে করবেন না এগুলো কেবল জামাত সমর্থকদের কথা । বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের টক শো, জামাতি অর্থপুষ্ট বিভিন্ন দেশী এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার নিয়মিত বিবৃতি, জামাতি অনলাইন প্রচারনা এসব থেকে বার বার শুনতে শুনতে আমার আপনার আশপাশের অনেক সাধারন মানুষই এসব প্রশ্ন করে বসতে পারে ।

পাঠক আসুন একটু খুজে দেখা যাক রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমুলক বলতে আমরা আসলে কি বুঝি ? প্রচলিত অর্থে, "কোন সরকার বা রাজনৈতিক দল কেবলমাত্র রাজনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যে কোন বেআইনী কাজে লিপ্ত হলে তাকেই রাজনৈতিক উদ্দেশশ্যমুলক আচরন বলা হয় ।"  জামাত এবং জামাতের অংগসংগঠন গুলো এই কাগুজে সংজ্ঞাটাই বিচারের শুরু থেকে আওড়ে যাচ্ছে । মজার ব্যপার হল এই চেষ্টা জামাতের মত মাল্টিমিলিয়ন ডলার স্কেলে না হলেও বিশ্বে এই প্রথম নয় । ইতিহাসের পাতা ঘাটলে এমন আরো বহু নজীর মেলে এবং দেখা যায় যুদ্ধপরাধের অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাদের বিচার প্রক্রিয়াকে রাজনৈতিক পক্ষপাত দুষ্ট বলে আখ্যায়িত করেছে ।

(ক) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যাল ইয়োগস্লাভিয়া [ ইউ.এন সমর্থিত ] । আসামী পক্ষ, গ্রীক এমপি এবং রাশিয়ান সরকারের দাবী এই বিচার প্রক্রিয়া অর্থের অপচয় এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমুলক । [৭,৮] 
(খ) প্রাক্তন লাইবেরিয়ান প্রেসিডেন্ট চার্লস টেইলরকে যুদ্ধপরাধের অপরাধে অভিযুক্ত করে ইউ.এন সমর্থিত সিয়েরা লিওনের এক বিশেষ আদালত । আসামী পক্ষের দাবী এই বিচার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমুলক । [৯]  
(গ) বিশ্ববিখ্যাত ন্যুরেমবার্গ ট্রায়াল, রোয়ান্ডা ওয়ার ক্রাইম ট্রায়াল , টোকিও ওয়ার ক্রাইম ট্রায়াল, সাদ্দাম হুসেইন ট্রায়াল প্রতিটি বিচার প্রক্রিয়াই "ভিকটরস জাস্টিস",  "রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমুলক" ইত্যাদি বিভিন্ন বিশেষনে ভুষিত হয়েছে । [১০]    

সুতরাং দেখা যাচ্ছে অধিকাংশ যুদ্ধপরাধের বিচারের প্রক্রিয়ার গায়েই রাজনৈতিক প্রতিশোধপরায়নতার কালিমা লেগে আছে ।  তবে অনেক আঈন বিশেষজ্ঞই যুদ্ধপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে  'রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমুলক' বিশেষনটির এমন প্রচলিত অর্থে ব্যবহারের ব্যপারে জোরালো আপত্তি জানিয়েছেন । লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সের প্রফেসর গ্যারি সিম্পসন দাবী করেন, "সকল যুদ্ধপরাধের বিচার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমুলক, তবে প্রচলিত অর্থে নয় । স্বৈরশাসন,  ধর্মান্ধতা, বর্নবাদের রাজনৈতিক আদর্শকে আস্তাকুড়ে ছুড়ে ফেলে নতুন আদর্শ গ্রহন করে নেয়ার অর্থে  [১১]।"  যুদ্ধপরাধ/মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযুক্ত ব্যক্তিরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্বৈরশাসক কিংবা কোন মৌলবাদী/বর্ণবাদী রাজনৈতিক আদর্শের অনুসারী । ভ্রষ্ট রাজনৈতিক আদর্শ বাস্তবায়নে জঘন্যতম কাজ করতেও তাদের বাধে না । তাদের পতনের সাথে সাথে পতন হয় তাদের রাজনৈতিক আদর্শেরও । ব্যক্তির সাথে সাথে বিচারের মুখোমুখি হয় ব্যক্তির রাজনৈতিক আদর্শও । আর তাই বিচার প্রক্রিয়াটাও হতে হয় দৃষ্টান্তমুলক । ন্যুরেমবার্গ ট্রায়াল এর সবচেয়ে বড় উদাহরন । নাৎসী অফিসারদের সাথে সাথে বিচারের মুখোমুখি হয় নাৎসী আদর্শেরও । পুরো বিশ্বের কাছে এই নাৎসী আদর্শ এক ঘৃন্য মতবাদের সমার্থক হয়ে দাড়ায় । এই বিচারের ব্যপ্তিটা এতটাই সুদুরপ্রসারী যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রায় ৭ দশক পরেও এই আদর্শ সমান ভাবেই ঘৃনিত । একবিংশ শতাব্দীর এই উন্নত বিশ্বে এখন রাষ্ট্রপ্রধানকে নিয়ে রসিকতা যায়; ধর্মকে ব্যঙ্গ করা যায় কিংবা পতিতার সাথে হাতেনাতে ধরা পড়েও রাজনীতিতে টিকে থাকা যায় [১২] । কিন্তু এই লিবারেল সমাজে এখনো গ্রহনযোগ্য নয় নাৎসী আদর্শের ক্ষুদ্রতম কোন নিদর্শনও । তাই এখনো নাৎসী কস্টিউম পরার অপরাধে ছোট শিশুকেও স্কুল থেকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়, বন্ধুর বাড়ির ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে নাৎসী পোষাক পরার অপরাধে চাকরী হারাতে হয় ব্রিটিশ পরিবহন সচিবকে [১৩, ১৪] ।  রাজনৈতিক আদর্শের সংঘাতের বিচারে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যালও রাজনৈতিক ট্রাইবুন্যাল । জামাত-এ-ইসলামের ধর্মান্ধ ও মৌলবাদী রাজনৈতিক আদর্শকে চিরতরে আস্তাকুড়ে ছুড়ে ফেলে একটি আধুনিক এবং ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক আদর্শ গ্রহন করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া নিশ্চিত করাই এই বিচার প্রক্রিয়ার মুল লক্ষ্য ।

চৌধুরী মঈনউদ্দিন বাংলাদেশের রাজনীতির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত নয় । তাই প্রচলিত অর্থেও তার বিচারকে "বাংলাদেশ সরকারে রাজনৈতিক অভিসন্ধিমুলক" বলে অভিহিত করে তাই আঈনজীবি ব্যারিস্টার টবি ক্যাডম্যান তার বালখিল্য আচরনেরই প্রমান দিলেন আরেকবার । এই লেখা যখন প্রায় শেষ করছি ঠিক তখনি চোখে পড়ল টবি ক্যাডম্যানের সাক্ষাতকারের এই ভিডিওটি । ভিডিওটিতে তিনি আঈনের পরিভাষায় দাবী জানালেন, তার মক্কেল চৌধুরী মঈনউদ্দিন এই ট্রায়ালের ব্যপারে কোন নোটিস পাননি এবং অবহীত নয় । তাই এই রায় ত্রুটিপুর্ন [১৫] । টবি ক্যাডম্যান বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ব্যপারে গোড়া থেকেই অবহিত এবং নিয়মিত আঈনী ভাষায় কড়া সমালোচনাও করেছেন তিনি । তার মক্কেল চৌধুরী মঈনউদ্দিনের মামলার ব্যপারে না জানার কোন কারন থাকার কথা নয় এবং এ ব্যপারে তার মক্কেল অবহীত না থাকার দায় তার ঘাড়েই বর্তায় এবং একজন আঈনজীবী হিসেবে তার যোগ্যতাকেই মারাত্মক ভাবে প্রশ্নবিধ্য করে । বিস্তারিত আঈনী বিশ্লেষনের জন্য আঈন বিশেষজ্ঞদের মতামত জানার  অপেক্ষায় রইলাম ।

শেষ কথা ঃ 

শেষ একটি প্রশ্ন করে আজকের মত বিদায় নিব । "কেন যুদ্ধের শেষ প্রহরে এসে বুদ্ধিজীবিদের হত্যা করা হল ?" এই প্রশ্নটা আমাদের কজনের মাথায় আসে । আপাত দৃষ্টিতে এই হত্যাকান্ডকে "পাকিস্তানিবিরোধী অবস্থানের কারনে হত্যা করা হয়েছে" বলে চালিয়ে দেয়া যায় অনায়াসেই । সরলীকরনে বিশ্বাসী বাঙালি তাই সহজেই মেনে নেয় এই ব্যখ্যা । কিন্তু কেন যুদ্ধের নয় মাসে নয় ? কেন একেবারে শেষ প্রহরে এসে ? বাঙালিত্ব আর ধর্মীয় গোড়ামি এই দুই খুব একটা সহজে মিশে না । পাকিস্তানের জন্ম থেকেই এই দুই আদর্শের দ্বন্দটাই শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের কাল হয়ে দাড়িয়েছিল । বাঙালিত্ব বাংলার প্রতিটি বাঙালির স্বত্তায় মিশে আছে । ধর্মকে তার পাশে যদিও বা কিছুটা জায়গা দেয়া যায়, ধর্মান্ধতাকে কখনোই নয় । বাংলাদেশের স্বাধীনতার মাঝ দিয়ে বাঙালি চিৎকার করে এই রাজনৈতিক চেতনারই  জানান দেয় । নতুন এই আদর্শের বিস্তার, বিকাশ এবং ধর্মান্ধ পাকিস্তানি আদর্শের বিশ্লেষনের মাধ্যমে নাৎসী আদর্শের মতই তার সমাধী রচনায় অগ্রনী ভুমিকা পালনের দায়িত্ব পড়ত বাংলার বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায় কাঁধেই । রাজনৈতিক পাকিস্তানের পরাজয় ঘটলেও আদর্শিক পাকিস্তানের নেতারা এই ভয়টা থেকেই যুদ্ধের শেষ প্রহরে ঘৃন্যতম এই হত্যাকান্ড ঘটায় । বেচে থাকায় সুযোগ করে দিতে চায় পাকিস্তান আদর্শের । তাদের এই ঘৃন্য হত্যাকান্ডের কারনেই বাংলাদেশে বেচে থাকে মৌলবাদী পাকিস্তানের ভুত । বাংলাদেশের জন্য তাই আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের গুরুত্ব অপরিসীম । আঈনী নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি সময় এসেছে সামাজিক ভাবে ধর্মান্ধ পাকিস্তান আদর্শের ভুতগুলোকে (জামাত-এ-ইসলাম, হেফাজতে ইসলামের)  কাঁধ থেকে ঝেড়ে ফেলে ধর্মনিরপেক্ষ প্রগতিশীল বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার ।

===================================================================


ঘচাংফু
ইমেইল ঃ dosshughochangfoo অ্যাট gmail ডট com

===================================================================
তথ্যসুত্র ঃ
১। http://en.wikipedia.org/wiki/1971_killing_of_Bengali_intellectuals
২। http://www.youtube.com/watch?v=lvbotYo-6rI
৩। http://www.genocidebangladesh.org/?p=296
৪। http://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=2465e4db3007807bc39d5f784b291809&nttl=03112013236304
৫। http://www.bbc.co.uk/news/uk-23495314
৬। http://metro.co.uk/2013/11/03/fugitive-muslim-leader-based-in-britain-sentenced-to-death-in-bangladesh-over-war-crimes-4172091/
৭। http://www.breakingnews.ie/world/milosevic-trial-politically-motivated-witness-171792.html
৮। http://en.wikipedia.org/wiki/International_Criminal_Tribunal_for_the_former_Yugoslavia#Criticism
৯। http://www.voanews.com/content/charles-taylor-lawyer-says-trial-is-neocolonialism-117648753/136232.html
১০। http://en.wikipedia.org/wiki/Victor%27s_justice
১১। Law, War & Crime: War Crimes, Trials and the Reinvention of International Law By Gerry J. Simpson 
১২। http://politicalhumor.about.com/od/politicalgaffes/tp/most-embarrassing-moments-of-decade.htm
১৩। http://www.theguardian.com/lifeandstyle/shortcuts/2013/oct/04/boy-dressed-hitler-nazi-costumes
১৪। http://www.independent.co.uk/news/uk/politics/nazi-stag-party-mp-is-sacked-6278863.html
১৫। http://www.youtube.com/watch?v=O77FUpBnCEo&feature=youtu.be





Monday 21 October 2013

ইশ্বর দখল

" মাতবর সাব ... মাতবর সাব ... সর্বনাশ হই গেল ", চিৎকার করতে করতে মাতবরের উঠানে শামসুর প্রবেশ ।
চারদিকে এখনো শীতের কুয়াশছন্ন ঠান্ডা ঠান্ডা আমেজ । শামসুর চিৎকার শুনে মাতবরের ষাটোর্ধ চাচী উঠান ঝাড়ু দেয়া ছেড়ে, ঝাড়ু হাতেই এগিয়ে আসে । সদ্য ঘুম থেকে ওঠা মাতবর একহাতে লুংগির কাছাটা ঠিক করে নিয়ে দরজা খুলে উঠানে এসে দাড়ালো ।
- কিরে শামসু, বেনশে বেইন্যা, এরুম চিল্লাসের কা ??
- মাতবর সাব সর্বনাশ হই গেছে । জাইল্যা পাড়ার আহসাইন্না লোকলস্কর লই নতুন চর দখল কইরতে গেছে ।
নতুন চর বেদখল হয়ে যাওয়ার খবর শুনে মাতবরের চোখের ঘুমের শেষ লেশটুকুও কেটে গেল । চোখের রক্তাভ লাল রংটা রাত জাগার ক্লান্তি না পায়ের রক্ত মাথায় চড়ে যাওয়ার কারনে তাও ঠিক বোঝা যাচ্ছে না । লুংগির কাছাটা কোন মতে বেঁধে নিয়ে শামসুকে চিৎকার করে হুকুম দিল, "অক্ষনি জসিম লাঠিয়ালরে খবর দে । আহসাইন্না বড় বাড়ি গেছে । আইজগা হিডাই হিজ্যার ভুত ছাড়ামু । " এর পরের ঘটনা অবশ্য স্বচক্ষে দেখা হই নাই । লোকজনের বয়ানে শোনা । জসিম লাঠিয়ালের লাঠি আর আহসানের মাথার মিলনেই এই গল্পের সমাপ্তি ।
দখল । দখল শব্দটার মনে হয় কোন গাছ পাথার নাই । শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চলে আসা একটি প্রথা । খাদ্য এবং যৌনাচার মানুষের আদিমতম দুটি মৌলিক চাহিদা । এই দুই ভোগবাদী আচরনের হাত ধরেই হয়তো চলে এসেছিল মানুষের দখল করে নেয়ার প্রবৃত্তি । মানব সভ্যতার আদি থেকেই আমাদের দখলের নেশা । ছোট-বড়, দামী-সস্তা, সুন্দর-অসুন্দর যাই দেখি না কেন, দখল করার একটা তীব্র বাসনা আমাদের মাঝে কাজ করে । তা সে যথাযথ মুল্য দিয়েই হোক বা বিনামুল্যেই হোক । উপরে বলা ছোট্ট গল্পটা দখলের আদিমতম রুপগুলোর একটি উদাহরন । নোয়াখালির চরাঞ্ছলে পৈত্রিক নিবাস হওয়ার কারনে ছেলেবেলায় প্রায়ই এমন চর দখলের গল্প শুনতে পেতাম আর তাই দখলের এই গল্পের শুরুটাও করলাম চর দখলের গল্প বলেই । নিজে কখনো চর দখল না করলেও ছেলেবেলায় ছোট ভাইয়ের ঘুড়ি, লাটিম, ফুটবল, ব্যাট থেকে শুরু করে বিছানার বড় কোল বালিশটা পর্যন্ত দখল করেছি বিস্তর । তবে বড় হতে সাথে সাথে নিজের দখলের প্রবৃত্তিটাকে কমাতে পারলেও আশে পাশে দখলের উদাহরনের কোন কমতি ছিল না ।
দখল হয়ে যেতে দেখেছি বাড়ির পাশের ছোট্ট খালটা । জানালার এক চিলতে নীল আকাশটা দখল করে নিয়েছিল দ্রুত বেড়ে ওঠা বহুতল ভবন। প্রেমিকার স্মৃতিবিজড়িত পার্কের বেঞ্চিটাও চলে যেতে দেখেছি নেশাখোরদের দখলে । বাংলাদেশে মসলিন আর জামদানীর কাপড়ের পেটেন্টও ভারতের দখলে চলে যেতে দেখেছি । গনতন্ত্র শিক্ষার মুল্য দিতে গিয়ে বেদখল হতে দেখেছি পুরো দেশ এবং জাতিকে ।
তবে সম্প্রতি মাঠঘাট, নদী, দেশ, সাগর ছাড়িয়ে মানবজাতী সাফল্যের সাথে দখলদারীত্বে নতুন মাত্রা যোগ করেছে । মানবজাতির দখল দখল খেলার নতুন বলি স্বয়ং ইশ্বর । ভুল বোঝার যেন কোন অবকাশ না থাকে তাই খুলেই বলি । ইশ্বর নামের কোন ব্যক্তি, জায়গা বা বস্তু নয় । ধর্মাবতার ইশ্বরকেই আমরা দখল করেছি । আমাদের জন্য এই অসামান্য কাজ সাধন করেছেন মালেশিয়ার ধর্মপ্রান মুসলিম ভাইয়েরা । মালেশিয়ার আদালত রায় দিয়েছে "আল্লাহ" একমাত্র মুসলিমদের সম্পত্তি[১] । একমাত্র তারাই "আল্লাহকে" ব্যবহার করতে পারবেন । অন্য সকল ধর্মালম্বী লোকের জন্য আল্লাহর ব্যবহার দন্ডনীয় অপরাধ । তাদের এই অসাধারন অর্জনে তাদের প্রতি আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা । মুসা ইব্রাহীমের পর আর কোন মুসলিম মনে হয় না এত উচুতে কিছু দখল করেছেন ।
তা এই দখল নিয়ে নানারকম সামাজিক, মানবিক, আইনী আলোচনা হতে পারে । পৃথিবী জুড়ে নিন্দা এবং স্তুতি উভয়ের বন্যা বয়ে যেতে পারে । আল্লাহ আবার বেদখলও হয়ে যেতে পারেন । তবে আমরা আপাতত দখলের গল্প শুনতে শুনতে ক্লান্ত । তাই গল্পের এই পর্যায়ে ধরাধাম থেকে বিদায় নিচ্ছি । যিনি দখল হলেন তাঁরও একটু সুলুক সন্ধান করতে হচ্ছে ।
ধরাধাম ছেড়ে খানিকটা উপরে উঠতে হচ্ছে । কতটা উপরে উঠতে হবে তা ঠিক জানা নেই । জায়গাটার নাম ধামও ঠিকঠাক জানা নেই । আমাদের কল্পনার জোরেই তৈরি কিনা তাই সময় এবং কল্পনাভেদে (মস্তিষ্কের অনুর্বরতা ভেদে) অনেক কিছুই বদলে যায়, এমনকি নামটাও । জায়গাটার বর্ননা দিতে গেলে অনেকটা স্বর্গের বর্ননা দিচ্ছি বলেই মনে হবে । চারিদিকে সবুজের ছড়াছড়ি । পাহাড়ের গা থেকে নেমে আসা ঝরনার পানি নদীতে মিশে কুল কুল করে বয়ে যাচ্ছে । গাছে গাছে পাখি ডাকছে । দুরে কোথাও থেকে যেন একটা বাঁশির শব্দ আসছে । স্বচ্ছ স্ফটিকের মত দেহের অধিকারী ছেলে আর মেয়েরা নীরাভরন হয়ে নদীতে জলকেলী করছে । কি লোভ হচ্ছে ? আপনারই তো কল্পনা এসব । মন খুলে ভাবুন না । কে বাধা দিচ্ছে ? তো এমন এক জায়গাতেই মুখোমুখি অনেক গুলো প্রাসাদ প্রতীম বাড়ি । প্রত্যেকটি প্রাসাদেরই অদ্ভুত নিজস্বতা রয়েছে আকারে, রংয়ে । প্রতিটির রয়েছে অদ্ভুত সব ঢংয়ের গম্বুজ । কোনটা গোল, কোনটা আবার তে-কোনা । একটার গায়ে চাঁদ তারা আকা । তার পাশেরটাই পুরোনো ধাচের পাথরের কাজ করা । প্রত্যেকটা প্রাসাদের সামনেই পাহারায় রয়েছে বিশাল আকারের সব দেহরক্ষী । এই সুন্দর নির্ঝঞ্ঝাট রাজ্যে এমন বিশালাকায় দেহরক্ষীর কি প্রয়োজন তা ঠিক বোঝা গেল না ? নিশ্চই কোন উজবুকের কল্পনা ! এই প্রাসাদগুলোর একটাতেই ধর্মাবতার আল্লাহর দরবার ।
ধর্মাবতার ঃ কোরবানীর আপডেট বল ধর্মমন্ত্রী । আমার মুমিন বান্দারা আমাকে খুশি করার জন্য যথেষ্ট রক্ত ঝরিয়েছে তো এই বছর ।
ধর্মমন্ত্রী ঃ জ্বী ধর্মাবতার । গরু, উট, দুম্বা, ভেড়ার রক্তে দুনিয়া সয়লাব । দুনিয়া জুড়ে মাংস খাওয়ার মচ্ছব চলছে । তবে ছাগল একটু কম কোরবানী হয়েছে এইবার ।
ধর্মাবতার ঃ হুমমমম ।
ধর্মাবতার ঃ অর্থমন্ত্রী, তুমি শোনাও এবার । প্রাসাদের দক্ষিনদিকে গডের ২ বিঘা জমি এই কোরবানীর সিজনেই কিনে নিব ভাবছিলাম । প্রার্থনার খাজনা কতদুর আদায় হল ?
অর্থমন্ত্রী ঃ ধর্মাবতার, খাজনা আদায়ে ঘাটতি আছে । এই সিজনে আর মনে হয় জমিটা কেনা হবে না । উপরুন্ত প্রাসাদের দক্ষিনের প্রাচীরের দেয়াল ধ্বসে পড়তে পারে ।
ধর্মাবতার ঃ বল কি ? খাজনা আদায় হয় নাই কেন ? কার এত বড় সাহস ? আজরাইলরে ডাক । আজকেই তারে মৃত্যুর ব্যপারে নরম গরম কিছু ভয় দেখিয়ে দিতে বল ।
অর্থমন্ত্রী ঃ হুজুর, আজরাইলের দরকার হবে না । আপনি বার্তামন্ত্রী গিব্রিল জিজ্ঞেস করূন । তিনি ঘটনা ভাল বলতে পারবেন ।
ধর্মাবতার ঃ গিব্রিল, ঘটনা কি ?
গিব্রিল ঃ হুজুর । চলছিল সবই ঠিক ঠাক । মালেশিয়াতে মুসলিম এবং খ্রিস্টান দুই উজবুক গোষ্ঠিই আপনার নামেই প্রার্থনা করে আসছিল । পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের মায়া ত্যাগ করে সেই প্রার্থনা উপরে আসামাত্র, আপনার নামের বারকোড লাগানো প্রার্থনাগুলো আমাদের কালেক্টিং অফিসার আপনার খাজনার বাক্সে ভরে নিচ্ছিল । গডের সমর্থক গোষ্ঠি দুই একবার যে ট্যা ফ্যা করে নাই তা না । তবে আজরাইল হুমকি দেয়াতে আর তেমন উচ্চবাচ্য করে নাই । কিন্তু আপনার একদল উজবুক কল্পনাবাজ সমর্থক গোষ্ঠি কয়েক বছর আগে কোর্টে গিয়ে দাবী করল, "আপনার উপর অধিকার নাকি শুধু তাদের" । প্রথমে আদালত এদের কথা তেমন একটা আমলে নেয় নাই । আমরাও আর তেমন একটা গুরুত্ব দেই নাই । কিন্তু সমস্যা বাধল, যখন এই উজবুকের দল খ্রীস্টানদের চার্চ জ্বালাও পোড়াও শুরু করল । তাই কোরবানীর ঠিক আগ মুহুর্তে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার্তে মালেশিয়ান কোর্ট সিদ্ধান্ত দিল কেবল মাত্র ঐ উজবুকের দলই আপনার নামে প্রার্থনা করতে পারবে । ব্যস । ভাইটাল একটা সময়ে আমরা কিছু বোনাস প্রার্থনা হারালাম ।
ধর্মাবতার ঃ বটে । উজবুকের দলের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিও বড় আজব রকমের ! এই উজবুকের দল নিয়ে কি করে যে আমি আমার এই সাম্রাজ্য টিকিয়ে রাখব এই চিন্তায় আমার রাতে ঘুম হয় না আজকাল ।
ঠিক এই সময়ে রাস্তার উল্টো পাশে গডের প্রাসাদ থেকে বিকট শব্দে বিস্ফোরনের আওয়াজ এল । ধর্মাবতার তাঁর চশমাটা চোখে দিয়ে জানালা দিয়ে উকি দিয়ে দেখলেন, গড একটা বিশাল সাইজের হাউইতে আগুন দিচ্ছেন । গডের ম্যাড়ম্যাড়ে রং এর প্রাসাদটাও যেন একটু বেশীই চকচক করছে আজ । নতুন দখল করা কল্পনাবাজ সমর্থকদের কল্পনার জোরেই হবে হয়তো ! সদ্য আগুন দেয়া হাউইটা শো শো করে উপরের দিকে উঠে গিয়ে স্বশব্দে ফেটে পড়ল । চারিদিকে ছড়িয়ে পড়তে লাগল সদ্য বেদখল হয়ে যাওয়া আল্লাহর কল্পনা ।[/justify]
=====================================
ঘচাংফু : দুধর্ষ চৈনিক দস্যু নই । নিতান্তই ভেতো বাঙালি ।
ইমেইল ঃ dosshu ghochang foo অ্যাট gmail ডট com